সরকারি কলেজে শিক্ষক সঙ্কট নিরসনে বিশেষ বিসিএস পরীক্ষার আয়োজন করতে যাচ্ছে সরকার। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনে (পিএসসি) চাহিদাপত্র পাঠাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। রোববার (১ এপ্রিল) সচিবালয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (কলেজ) ড. মোল্লা জালাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় বিষয়ভিত্তিক শূন্যপদ নিয়ে আলোচনা হয়।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে কমার্শিয়াল ইনস্টিটিউট, শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ, আলিয়া মাদ্রাসাসহ ৩২৯টি সরকারি কলেজ রয়েছে। এসব কলেজে মোট ১৬ হাজার ৫৫৪টি শিক্ষকের পদ রয়েছে। এর মধ্যে অধ্যাপকের পদ রয়েছে ৫০৭টি, সহযোগী অধ্যাপক দুই হাজার ২২১, সহকারী অধ্যাপক চার হাজার ২৮৪ এবং প্রভাষক পদে আট হাজার ২৬টি পদ রয়েছে। ২১৫টি সরকারি কলেজে শিক্ষক সঙ্কট সবচেয়ে বেশি। প্রায় চার হাজার শিক্ষকের পদ খালি রয়েছে এসব প্রতিষ্ঠানে। সবচেয়ে বেশি শূন্য প্রভাষকের পদ। এ পদ খালি আছে প্রায় দুই হাজারটি। শিক্ষার মান উন্নয়নে নানা উদ্যোগ নেয়া হলেও শিক্ষক শূন্যতায় নানাভাবে ব্যাহত হচ্ছে কলেজের শিক্ষাকার্যক্রম। সাধারণ বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে যে পরিমাণ শিক্ষক নিয়োগ পাচ্ছেন তা দ্বারা শিক্ষক সঙ্কট দূরীকরণ সম্ভব হচ্ছে না।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) প্রফেসর মোহাম্মদ শামছুল হুদা দৈনিকশিক্ষাকে বলেন, দীর্ঘদিন যাবত সরকারি কলেজে প্রভাষক পদে শিক্ষক সঙ্কট রয়েছে। এ করণে শিক্ষা ক্যাডারে বিশেষ বিসিএস পরীক্ষার আয়োজন করতে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনে (পিএসসি) চাহিদা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে চলতি মাসেই এ চাহিদাপত্র পাঠানো হবে।
তিনি আরও বলেন, পিএসসির আয়োজিত সাধারণ বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে যে সংখ্যাক শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশ আসে তাদের নিয়োগ দিয়ে এ সমস্যা দূরীকরণ সম্ভব হচ্ছে না। এখনো অনেক কলেজে বিষয়ভিত্তিকে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। বিশেষ বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে সরকারি কলেজে নিয়োগের জন্য এক থেকে দেড় হাজার প্রভাষক নির্বাচনের জন্য সুপারিশ করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
উল্লেখ্য, সরকারি কলেজের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করানোর মতো পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগের জন্য সরকার এর আগেও কয়েকটি বিশেষ বিসিএস পরীক্ষার আয়োজন করেছে। কয়েকহাজার শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে। তবে, বিশেষ বিসিএস পরীক্ষার বিরোধীতা করে আসছে বি সি এস সাধারণ শিক্ষা সমিতির একাংশ। তাদের যুক্তি বিশেষ বিসিএস পরীক্ষা হয় একশ অথবা দুশো নম্বরের যা অন্যান্য বিসিএসএর তুলনায় খুবই নগণ্য। এর মাধ্যমে শিক্ষা ক্যাডরে বৈষম্য সৃষ্টি হয় বলে দাবী করে আসছেন সমিতির নেতৃবৃন্দ।
সেনা শাসক জিয়াউর রহমান সরকারি কলেজ শিক্ষকদেরকে ক্যাডারভুক্ত করেছেন। কিন্তু পররাষ্ট্র, প্রশাসন, পুলিশ, ট্যাক্সসহ অতি আগ্রহের ক্যাডার কর্মকর্তাদের সমান সুযোগ দেননি শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত শিক্ষকদের। এর ফলে সরকারি কলেজ শিক্ষকদের মন খারাপ থাকে।
No comments:
Post a Comment